আজ স্বপ্নের নায়ক সালমান শাহ্ এর ২৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী

Cumilla24

১৬ দিন আগে মঙ্গলবার, মে ২০, ২০২৫


#

হিমু, কুমিল্লা:

ভালোবাসার আরেক নাম আমাদের সালমান শাহ্ । স্বপ্নের নায়ক "সালমান শাহ্"এর মৃত্যুর ২৭ বছর পূর্ণ হলো আজ ৬ সেপ্টেম্বর। সালমান শাহ্ এর মৃত্যু বার্ষিকীতে বিনম্র শ্রদ্ধা। দেখতে দেখেতে ২৭ বছর পেরিয়ে গেলো সালমান নেই। ১৯৯৬ সালের আজকের এই দিনে সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান সালমান শাহ্। সালমানের মতো অভিনেতার অকাল মৃত্যু সত্যিই আমাদের জন্য অনেক বেদনার, অনেক কষ্টের।

বাংলাদেশের রোমান্টিক চলচ্চিত্রের ধ্রুবতারা, অমর কিংবদন্তি নায়ক সালমান শাহ্ আমাদের চলচ্চিত্র জগতে নুতন এক স্পন্দন জাগিয়ে তুলতে পেরেছিলেন। 

আজও অবধি সিনেমাপ্রেমীদের অন্তরে দীর্ঘশ্বাসের সাথে উচ্চারিত হয় সালমান শাহ্ এর নাম । কেননা সালমান শাহ্ পরবর্তী সময়ে যারা চলচ্চিত্রে নায়ক হওয়ার জন্য এসেছেন তারা প্রত্যেকেই বলেছেন, এখনো - সালমান শাহ্ -ই ছিলেন তাদের অনুপ্রেরণার প্রধান উৎস।

আমাদের চলচ্চিত্র জগতের স্বপ্নের নায়ক সালমান শাহ্ যুগ যুগ বেঁচে থাকবেন চলচ্চিত্র প্রেমিদের হৃদয়ে। তার প্রকৃত নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। আমাদের রুপালি পর্দায় তিনি সালমান শাহ্ নামেই পরিচিত। 

IFrame

জনপ্রিয় একটি হিন্দি সিনেমার অফিশিয়াল রিমেক ছিল 'কেয়ামত থেকে কেয়ামত'। সোহানুর রহমান সোহানের হাত ধরে ১৯৯২ সালে 'কেয়ামত থেকে কেয়ামত' সিনেমার মাধ্যমে ধূমকেতুর মতোই নায়ক রূপে ঢালিউড চলচ্চিত্র জগতে উদিত হয়েছেন সালমান শাহ্। 

এ সিনেমা মুক্তির পর রাতারাতি ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেন সালমান শাহ্ । এরপরে আর তাকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক নুতন ছবিতে অভিনয় করে চলচ্চিত্রের জগতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। সালমানের এই অভিযাত্রা ছিল যেন " এলাম, পা- রাখলাম, জয় করলাম এর মতো।  

পর্দায় সালমান শাহ্ এর উপস্থিতি, পোশাক-পরিচ্ছেদ, সংলাপ বলার ধরন, হাঁটা কিংবা অভিনয় দক্ষতা সবকিছু মিলিয়ে দর্শকের মনে স্থান করে নিতে এতোটুকু সময় লাগেনি এ স্বপ্নের নায়কের। সালমান শাহ্ খুব তাড়াতাড়ি হয়ে উঠেছিলেন বাংলাদেশের তরুণদের ফ্যাশন আইকন।

IFrame

বাংলা সিনেমার মাধ্যমে সালমান শাহ্ যে স্টাইল তৈরি করে গেছেন, এখন পর্যন্ত সেটা থেকে কেউ বের হতে পারেনি। 

সালমান শাহ্ এর মাথায় রুমাল কিংবা চোখে গোল কালো ফ্রেমের চশমা। বড় শার্ট গিট্টু দিয়ে বেধে রাখা, মাথায় গামছা বাঁধা কিংবা তার স্টাইলিশ টুপি। যুগ যুগ দর্শক তা মনে রাখবে। টি শার্ট, সামনের দিকে ইন করে রাখলেও, পিছনের দিকে একটু খুলে রাখা, দাঁত দিয়ে নখ কাঁটা, চারকোণা সানগ্লাসের ট্রেন্ড ভেঙ্গে, গোল বা ওভাল সানগ্লাস পরা শুরু করা, মিলাদে বা, কারও জানাজায় পকেটে টুপি থাকা সত্ত্বেও রুমাল গিট্টু মেরে মাথায় পরা, স্নিকারস বা ক্যানভাস সু , কালো জুতার সাথে সাদা মোজা পরা, প্যান্টের বেল্টের ফুঁটা থেকে দ্বিগুণ তিনগুন সাইজে বড় গলার মেডেলের মত বড় বাকেলসেরওয়ালা বেল্ট পরা, ডায়াল নিচের দিকে দিয়ে হাত ঘড়ি পড়া, মাঝে মাঝে ডান হাতে ঘড়ি পরা, একটু পর পর চশমায় হাত দেয়া, তার এরকম হাজারটা স্টাইল আছে যা বলে শেষ করা যাবে না।

সালমান শাহ্ এই স্টাইল থেকে কি প্রজন্ম এখনো বের হতে পারছে? সেটা হয়তো সময় বলে দেবে। সালমান শাহ্ এর জন্ম হয়েছিল আমাদের চলচ্চিত্র জগতে ইতিহাস সৃষ্টি করার জন্য, তিনি তা করতেও পেরেছিলেন। 

সালমান শাহ্ ধুমকেতুর মতো ক্ষণিকের চলচ্চিত্র জগতের অবস্থানে মাত্র ৩ বছরের তার চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারের উপহার দিয়েছেন ২৭ টি ব্যবসা সফল ছবি।

আজও কৌতূহলী মানুষের মনে প্রশ্ন, সালমান শাহ্ এর বিশেষত্ব কী ছিল? কেন তিনি এতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন দর্শক হৃদয়ে? কেন মৃত্যুর দুই যুগ পরেও তাঁর জনপ্রিয়তা আজও ম্লান হয়নি এতোটুকুও কমেনি?

পৃথিবীতে বেঁচে থাকলে সালমান শাহ্ এর বয়স হতো এখন ৫২ বছর। সালমান শাহ্ এখন আর পৃথিবীতে নেই। তাঁর মৃত্যুতে এ দেশের চলচ্চিত্র শিল্পের যে ক্ষতি হয়েছে, তা আজও পূরণ হয়নি। 

হয়তো স্বপ্নের নায়ক সালমান শাহ্ এর জন্ম হয়েছিল চলচ্চিত্র জগতে ক্ষণিকের বিচরণে উনার কারিশমাটিক অভিনয়ের সৃজনশীলতায় এমনি করে দর্শকের হৃদয়ে বেঁচে থাকার জন্য। 

এই দেশের চলচ্চিত্র প্রেমীরা যত দিন বেঁচে থাকবে, সালমান শাহ্ তত দিন বেঁচে থাকবেন তাদের হৃদয়ে। নায়ক হিসেবে মৃত্যুর ২৭ বছর পরেও এমন অর্জন পৃথিবীর বুকে আর কারোও নেই। আজকের এই দিনে সালমান শাহ্ কে গভীর ভালোবাসা। আল্লাহ উনাকে বেহেশত নসীব করুন। 

global fast coder
ইউটিউব সাবস্ক্রাইব করুন  
Link copied